শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত।
হাই কোর্টের তলবে হাজির হয়ে সোমবার তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ পুলিশ সুপারকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখেছেন।
ওই নির্বাচনে ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. শাহজাহান আলী এবং তার পরিবারের সদস্যদের ওই সময় পর্যন্ত নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা এস এম তানভীর আরাফাতের পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী ও আহমেদ ইশতিয়াক।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক ও ইশরাত হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম।
আইনজীবী মনসুরুল হক আদালতে বলেন, “পুলিশ সুপার সেদিন ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন।”
আইনজীবী আহমেদ ইশতিয়াক পুলিশ সুপারের লিখিত আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন।
লিখিত আবেদনে তানভীর আরাফাত বলেন, “বিচার বিভাগের জন্য আমার মনে সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখানোর কথা দূরে থাক, বরং বিচার বিভাগের দেওয়া কাজে নিয়োজিত হতে পারলে নিজেকে সম্মানিত বোধ করি। এ ঘটনায় আমি মনের গভীর থেকে অনুতপ্ত। আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”
এক পর্যায়ে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারক বিচারপতি খিজির হায়াত পুলিশ সুপারকে বলেন, পুলিশকে কথায় নয় কাজে পটু হতে হবে। কে কোন মতাদর্শের, কোন দলের সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। সর্বস্তরের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুলিশের দায়িত্ব।
“কারো জন্য ভীতিকর না হয়ে তাদের কর্মকাণ্ডে মানুষের বন্ধু হতে হবে। পত্র-পত্রিকায় যা দেখলাম,তা যদি কুষ্টিয়ার বাস্তব চিত্র হয়, তা হবে জাতির জন্য ভয়ঙ্কর। এমন যাতে মানুষের মনে না হয় যে দেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। দেশকে পুলিশি রাষ্ট্র বানাবেন না। জাতি উৎকণ্ঠিত,এটা নিরসরন করার দায়িত্ব আপনাদের।”
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মহসীন হাসানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগের বিষয়ে ব্যখ্যা দিতে গত ২০ জানুয়ারি পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে তলব করে হাই কোর্ট।
সেই সাথে এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে।
এ সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর নজরে আসার পর হাই কোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এই আদেশ দিয়েছিল।
গত ১৬ জানুয়ারি ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কুষ্টিয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মহসিন হাসানের অভিযোগ ছিল, ভোটের দিন দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত এবং পুলিশ সদস্যরা তার সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণ করেন এবং দায়িত্ব পালনে বাধা দেন।